كهيعص (1)
কাফ-হা-ইয়া-‘আইন-সাদ [১] |
ذِكْرُ رَحْمَتِ رَبِّكَ عَبْدَهُ زَكَرِيَّا (2)
এটা আপনার রবের অনুগ্রহের বিবরণ তাঁর বান্দা যাকারিয়্যার [১] প্রতি |
إِذْ نَادَىٰ رَبَّهُ نِدَاءً خَفِيًّا (3)
যখন তিনি তার রবকে ডেকেছিলেন নিভৃতে [১] |
قَالَ رَبِّ إِنِّي وَهَنَ الْعَظْمُ مِنِّي وَاشْتَعَلَ الرَّأْسُ شَيْبًا وَلَمْ أَكُن بِدُعَائِكَ رَبِّ شَقِيًّا (4)
তিনি বলেছিলেন, ‘হে আমার রব! আমার অস্থি দুর্বল হয়েছে [১], বার্ধক্যে আমার মাথা শুভ্রোজ্জল হয়েছে [২]; হে আমার রব! আপনাকে ডেকে আমি কখনো ব্যর্থকাম হইনি [৩]। |
وَإِنِّي خِفْتُ الْمَوَالِيَ مِن وَرَائِي وَكَانَتِ امْرَأَتِي عَاقِرًا فَهَبْ لِي مِن لَّدُنكَ وَلِيًّا (5)
‘আর আমি আশংকা করি আমার পর আমার সগোত্রীয়দের সম্পর্কে, আমার স্ত্রী বন্ধা। কাজেই আপনি আপনার কাছ থেকে আমাকে দান করুন উত্তরাধিকারী |
يَرِثُنِي وَيَرِثُ مِنْ آلِ يَعْقُوبَ ۖ وَاجْعَلْهُ رَبِّ رَضِيًّا (6)
‘যে আমার উত্তরাধিকারিত্ত করবে [১] এবং উত্তরাধিকারিত্ত করবে ইয়া’কুবের বংশের [২] এবং হে আমার রব! তাকে করবেন সন্তোষভাজন। |
يَا زَكَرِيَّا إِنَّا نُبَشِّرُكَ بِغُلَامٍ اسْمُهُ يَحْيَىٰ لَمْ نَجْعَل لَّهُ مِن قَبْلُ سَمِيًّا (7)
তিনি বললেন, ‘হে যাকারিয়্যা! আমরা আপনাকে এক পুত্র সন্তানের সুসংবাদ দিচ্ছি, তার নাম হবে ইয়াহইয়া; এ নামে আগে আমরা কারো নামকরণ [১] করিনি। |
قَالَ رَبِّ أَنَّىٰ يَكُونُ لِي غُلَامٌ وَكَانَتِ امْرَأَتِي عَاقِرًا وَقَدْ بَلَغْتُ مِنَ الْكِبَرِ عِتِيًّا (8)
তিনি বললেন, ‘হে আমার রব! কেমন করে আমার পুত্র হবে যখন আমার স্ত্রী বন্ধ্যা ও আমি বার্ধক্যের শেষ সীমায় উপনীত!’ |
قَالَ كَذَٰلِكَ قَالَ رَبُّكَ هُوَ عَلَيَّ هَيِّنٌ وَقَدْ خَلَقْتُكَ مِن قَبْلُ وَلَمْ تَكُ شَيْئًا (9)
তিনি বললেন, ‘এরূপই হবে। আপনার রব বললেন, এটা আমার জন্য সহজ; আমি তো আগে আপনাকে সৃষ্টি করেছি যখন আপনি কিছুই ছিলেন না [১]। |
قَالَ رَبِّ اجْعَل لِّي آيَةً ۚ قَالَ آيَتُكَ أَلَّا تُكَلِّمَ النَّاسَ ثَلَاثَ لَيَالٍ سَوِيًّا (10)
যাকারিয়্যা বললেন, ‘হে আমার রব! আমাকে একটি নিদর্শন দিন।’ তিনি বললেন, ‘আপনার নিদর্শন এ যে, আপনি সুস্থ [১] থাকা সত্ত্বেও কারো সাথে তিন দিন কথাবার্তা বলবেন না।’ |
فَخَرَجَ عَلَىٰ قَوْمِهِ مِنَ الْمِحْرَابِ فَأَوْحَىٰ إِلَيْهِمْ أَن سَبِّحُوا بُكْرَةً وَعَشِيًّا (11)
তারপর তিনি (‘ইবাদাতের জন্য নির্দিষ্ট) কক্ষ হতে বের হয়ে তার সম্প্রদায়ের কাছে আসলেন এবং ইঙ্গিতে তাদেরকে সকাল-সন্ধায় আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করতে বললেন। |
يَا يَحْيَىٰ خُذِ الْكِتَابَ بِقُوَّةٍ ۖ وَآتَيْنَاهُ الْحُكْمَ صَبِيًّا (12)
হে ইয়াহইয়া![১] আপনি কিতাবটিকে দৃঢ়তার সাথে গ্রহণ করুন। আর আমরা তাকে শৈশবেই দান করেছিলাম প্রজ্ঞা [২]। |
وَحَنَانًا مِّن لَّدُنَّا وَزَكَاةً ۖ وَكَانَ تَقِيًّا (13)
এবং আমাদের কাছ থেকে হৃদয়ের কোমলতা [১] ও পবিত্রতা; আর তিনি ছিলেন মুত্তাকী। |
وَبَرًّا بِوَالِدَيْهِ وَلَمْ يَكُن جَبَّارًا عَصِيًّا (14)
পিতা-মাতার অনুগত এবং তিনি ছিলেন না উদ্ধত ও অবাধ্য [১]। |
وَسَلَامٌ عَلَيْهِ يَوْمَ وُلِدَ وَيَوْمَ يَمُوتُ وَيَوْمَ يُبْعَثُ حَيًّا (15)
আর তার প্রতি শাস্তি যেদিন তিনি জন্ম লাভ করেন, যেদিন তার মৃত্যু হবে এবং যেদিন তিনি জীবিত অবস্থায় উত্থিত হবেন [১]। |
وَاذْكُرْ فِي الْكِتَابِ مَرْيَمَ إِذِ انتَبَذَتْ مِنْ أَهْلِهَا مَكَانًا شَرْقِيًّا (16)
আর স্মরণ করুন এ কিতাবে মারইয়ামকে, যখন সে তার পরিবারবর্গ থেকে পৃথক হয়ে নিরালায় পূর্ব দিকে এক স্থানে আশ্রয় নিল [১] |
فَاتَّخَذَتْ مِن دُونِهِمْ حِجَابًا فَأَرْسَلْنَا إِلَيْهَا رُوحَنَا فَتَمَثَّلَ لَهَا بَشَرًا سَوِيًّا (17)
অতঃপর সে তাদের নিকট থেকে নিজেকে আড়াল করল। তখন আমরা তার কাছে আমাদের রূহকে পাঠালাম, সে তার নিকট পূর্ণ মানবাকৃতিতে আত্মপ্রকাশ করল [১]। |
قَالَتْ إِنِّي أَعُوذُ بِالرَّحْمَٰنِ مِنكَ إِن كُنتَ تَقِيًّا (18)
মারইয়াম বলল, আমি তোমার থেকে দয়াময়ের আশ্রয় প্রার্থনা করছি (আল্লাহ্কে ভয় কর) যদি তুমি ‘মুত্তাকী’ হও [১]। |
قَالَ إِنَّمَا أَنَا رَسُولُ رَبِّكِ لِأَهَبَ لَكِ غُلَامًا زَكِيًّا (19)
সে বলল, আমি তো তোমার রবের দূত, তোমাকে এক পবিত্র পুত্র দান করার জন্য [১]। |
قَالَتْ أَنَّىٰ يَكُونُ لِي غُلَامٌ وَلَمْ يَمْسَسْنِي بَشَرٌ وَلَمْ أَكُ بَغِيًّا (20)
মারইয়াম বলল, ‘কেমন করে আমার পুত্র হবে যখন আমাকে কোনো পুরুষ স্পর্শ করেনি এবং আমি ব্যাভিচারিণীও নই?’ |
قَالَ كَذَٰلِكِ قَالَ رَبُّكِ هُوَ عَلَيَّ هَيِّنٌ ۖ وَلِنَجْعَلَهُ آيَةً لِّلنَّاسِ وَرَحْمَةً مِّنَّا ۚ وَكَانَ أَمْرًا مَّقْضِيًّا (21)
সে বলল, ‘এ রূপই হবে। তোমার রব বলেছেন, ‘এটা আমার জন্য সহজ। আর আমরা তাকে এজন্যে সৃষ্টি করব যেন সে হয় মানুষের জন্য এক নিদর্শন [১] ও আমাদের কাছ থেকে এক অনুগ্রহ; এটা তো এক স্থিরীকৃত ব্যাপার।’ |
۞ فَحَمَلَتْهُ فَانتَبَذَتْ بِهِ مَكَانًا قَصِيًّا (22)
অতঃপর সে তাকে গর্ভে ধারণ করল এবং তা সহ দূরের এক স্থানে চলে গেল [১]। |
فَأَجَاءَهَا الْمَخَاضُ إِلَىٰ جِذْعِ النَّخْلَةِ قَالَتْ يَا لَيْتَنِي مِتُّ قَبْلَ هَٰذَا وَكُنتُ نَسْيًا مَّنسِيًّا (23)
অতঃপর প্রসব-বেদনা তাকে এক খেজুর-গাছের নীচে আশ্রয় নিতে বাধ্য করল। সে বলল, ‘হায়, এর আগে যদি আমি মরে যেতাম [১] এবং মানুষের স্মৃতি থেকে সম্পূর্ণ হারিয়ে যেতাম। |
فَنَادَاهَا مِن تَحْتِهَا أَلَّا تَحْزَنِي قَدْ جَعَلَ رَبُّكِ تَحْتَكِ سَرِيًّا (24)
তখন ফিরিশতা তার নিচ থেকে ডেকে তাকে বলল, ‘তুমি পেরেশান হয়ো না [১], তোমার পাদদেশে তোমার রব এক নহর সৃষ্টি করেছেন [২] |
وَهُزِّي إِلَيْكِ بِجِذْعِ النَّخْلَةِ تُسَاقِطْ عَلَيْكِ رُطَبًا جَنِيًّا (25)
‘আর তুমি তোমার দিকে খেজুর-গাছের কাণ্ডে নাড়া দাও, সেটা তোমার উপর তাজা-পাকা খেজুর ফেলবে। |
فَكُلِي وَاشْرَبِي وَقَرِّي عَيْنًا ۖ فَإِمَّا تَرَيِنَّ مِنَ الْبَشَرِ أَحَدًا فَقُولِي إِنِّي نَذَرْتُ لِلرَّحْمَٰنِ صَوْمًا فَلَنْ أُكَلِّمَ الْيَوْمَ إِنسِيًّا (26)
‘কাজেই খাও, পান কর এবং চোখ জুড়াও। অতঃপর মানুষের মধ্যে কাউকেও যদি তুমি দেখ তখন বলো, আমি দয়াময়ের উদ্দেশে মৌনতা অবলম্বনের মানত করেছি [১]। কাজেই আজ আমি কিছুতেই কোনো মানুষের সাথে কথাবার্তা বলবো না [২] |
فَأَتَتْ بِهِ قَوْمَهَا تَحْمِلُهُ ۖ قَالُوا يَا مَرْيَمُ لَقَدْ جِئْتِ شَيْئًا فَرِيًّا (27)
তারপর সে সন্তানকে নিয়ে তার সম্প্রদায়ের কাছে উপস্থিত হল; তারা বলল, ‘হে মারইয়াম! তুমি তো এক অঘটন করে বসেছ [১]। |
يَا أُخْتَ هَارُونَ مَا كَانَ أَبُوكِ امْرَأَ سَوْءٍ وَمَا كَانَتْ أُمُّكِ بَغِيًّا (28)
‘হে হারূনের বোন! [১] তোমার পিতা অসৎ ব্যক্তি ছিল না এবং তোমার মাও ছিল না ব্যাভিচারিণী [২]। |
فَأَشَارَتْ إِلَيْهِ ۖ قَالُوا كَيْفَ نُكَلِّمُ مَن كَانَ فِي الْمَهْدِ صَبِيًّا (29)
তখন মারইয়াম সন্তানের প্রতি ইংগিত করল। তারা বলল, ‘যে কালের শিশু তার সাথে আমারা কেমন করে কথা বলব?’ |
قَالَ إِنِّي عَبْدُ اللَّهِ آتَانِيَ الْكِتَابَ وَجَعَلَنِي نَبِيًّا (30)
তিনি বললেন, ‘আমি তো আল্লাহর বান্দা। তিনি আমাকে কিতাব দিয়েছেন, আমাকে নবী করেছেন |
وَجَعَلَنِي مُبَارَكًا أَيْنَ مَا كُنتُ وَأَوْصَانِي بِالصَّلَاةِ وَالزَّكَاةِ مَا دُمْتُ حَيًّا (31)
‘যেখানেই আমি থাকি না কেন তিনি আমাকে বরকতময় [১] করেছেন, তিনি আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন যতদিন জীবিত থাকি ততদিন সালাত ও যাকাত আদায় করতে [২] |
وَبَرًّا بِوَالِدَتِي وَلَمْ يَجْعَلْنِي جَبَّارًا شَقِيًّا (32)
‘আর আমাকে আমার মায়ের প্রতি অনুগত করেছেন এবং তিনি আমাকে করেননি উদ্ধত, হতভাগ্য |
وَالسَّلَامُ عَلَيَّ يَوْمَ وُلِدتُّ وَيَوْمَ أَمُوتُ وَيَوْمَ أُبْعَثُ حَيًّا (33)
‘আমার প্রতি শান্তি যেদিন আমি জন্ম লাভ করেছি [১], যেদিন আমার মৃত্যু হবে এবং যেদিন জীবিত অবস্থায় আমি উত্থিত হব। |
ذَٰلِكَ عِيسَى ابْنُ مَرْيَمَ ۚ قَوْلَ الْحَقِّ الَّذِي فِيهِ يَمْتَرُونَ (34)
এ-ই মারইয়ামের পুত্র ঈসা। আমি বললাম সত্য কথা, যে বিষয়ে তারা সন্দেহ পোষণ করছে [১]। |
مَا كَانَ لِلَّهِ أَن يَتَّخِذَ مِن وَلَدٍ ۖ سُبْحَانَهُ ۚ إِذَا قَضَىٰ أَمْرًا فَإِنَّمَا يَقُولُ لَهُ كُن فَيَكُونُ (35)
আল্লাহ্ এমন নন যে, কোনো সন্তান গ্রহণ করবেন, তিনি পবিত্র মহিমাময়। তিনি যখন কিছু স্থির করেন, তখন সেটার জন্য বলেন, ‘হও’ তাতেই তা হয়ে যায়। |
وَإِنَّ اللَّهَ رَبِّي وَرَبُّكُمْ فَاعْبُدُوهُ ۚ هَٰذَا صِرَاطٌ مُّسْتَقِيمٌ (36)
আর নিশ্চয়ই আল্লাহ্ আমার রব ও তোমাদের রব; কাজেই তোমরা তাঁর ইবাদাত কর, এটাই সরল পথ [১]। |
فَاخْتَلَفَ الْأَحْزَابُ مِن بَيْنِهِمْ ۖ فَوَيْلٌ لِّلَّذِينَ كَفَرُوا مِن مَّشْهَدِ يَوْمٍ عَظِيمٍ (37)
অতঃপর দলগুলো নিজেদের মধ্যে মতানৈক্য সৃষ্টি করল [১], কাজেই দুর্ভোগ কাফেরদের জন্য মহাদিবস প্রত্যক্ষকালে [২]। |
أَسْمِعْ بِهِمْ وَأَبْصِرْ يَوْمَ يَأْتُونَنَا ۖ لَٰكِنِ الظَّالِمُونَ الْيَوْمَ فِي ضَلَالٍ مُّبِينٍ (38)
তারা যেদিন আমাদের কাছে আসবে সেদিন তারা কত চমৎকার শুনবে ও দেখবে [১]! কিন্তু যালেমরা আজ স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে আছে।’ |
وَأَنذِرْهُمْ يَوْمَ الْحَسْرَةِ إِذْ قُضِيَ الْأَمْرُ وَهُمْ فِي غَفْلَةٍ وَهُمْ لَا يُؤْمِنُونَ (39)
আর তাদেরকে সতর্ক করে দিন পরিতাপের দিন [১] সম্বন্ধে, যখন সব সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে। অথচ তারা রয়েছে গাফলতিতে নিমজ্জিত এবং তারা ঈমান আনছে না। |
إِنَّا نَحْنُ نَرِثُ الْأَرْضَ وَمَنْ عَلَيْهَا وَإِلَيْنَا يُرْجَعُونَ (40)
নিশ্চয় যমীণ ও তার উপর যারা আছে তাদের চূড়ান্ত মালিকানা আমাদেরই রইবে এবং আমাদেরই কাছে তারা প্রত্যাবর্তিত হবে [১]। |
وَاذْكُرْ فِي الْكِتَابِ إِبْرَاهِيمَ ۚ إِنَّهُ كَانَ صِدِّيقًا نَّبِيًّا (41)
আর স্মরণ করুন এ কিতাবে ইবরাহীমকে [১]; তিনি তো ছিলেন এক সত্যনিষ্ঠ [২] নবী। |
إِذْ قَالَ لِأَبِيهِ يَا أَبَتِ لِمَ تَعْبُدُ مَا لَا يَسْمَعُ وَلَا يُبْصِرُ وَلَا يُغْنِي عَنكَ شَيْئًا (42)
যখন তিনি তার পিতাকে বললেন, ‘হে আমার পিতা! আপনি তার ইবাদাত করেন কেন যে শুনা না, দেখে না এবং আপনার কোনো কাজেই আসে না?’ |
يَا أَبَتِ إِنِّي قَدْ جَاءَنِي مِنَ الْعِلْمِ مَا لَمْ يَأْتِكَ فَاتَّبِعْنِي أَهْدِكَ صِرَاطًا سَوِيًّا (43)
‘হে আমার পিতা! আমার কাছে তো এসেছে জ্ঞান যা আপনার কাছে আসেনি; কাজেই আমার অনুসরণ করুন, আমি আপনাকে সঠিক পথ দেখাব। |
يَا أَبَتِ لَا تَعْبُدِ الشَّيْطَانَ ۖ إِنَّ الشَّيْطَانَ كَانَ لِلرَّحْمَٰنِ عَصِيًّا (44)
‘হে আমার পিতা! শয়তানের ইবাদাত করবেন না [১]। শয়তান তো দয়াময়ের অবাধ্য। |
يَا أَبَتِ إِنِّي أَخَافُ أَن يَمَسَّكَ عَذَابٌ مِّنَ الرَّحْمَٰنِ فَتَكُونَ لِلشَّيْطَانِ وَلِيًّا (45)
‘হে আমার পিতা! নিশ্চয় আমি আশংকা করছি যে, আপনাকে দয়াময়ের শাস্তি স্পর্শ করবে, তখন আপনি হয়ে পড়বেন শয়তানের বন্ধু। |
قَالَ أَرَاغِبٌ أَنتَ عَنْ آلِهَتِي يَا إِبْرَاهِيمُ ۖ لَئِن لَّمْ تَنتَهِ لَأَرْجُمَنَّكَ ۖ وَاهْجُرْنِي مَلِيًّا (46)
পিতা বলল, ‘হে ইবরাহীম! তুমি কি আমার উপাস্যদের থেকে বিমুখ? যদি তুমি বিরত না হও তবে অবশ্যই আমি পাথরের আঘাতে তোমার প্রান নাশ করব; আর তুমি চিরতরে আমাকে ত্যাগ করে চলে যাও। |
قَالَ سَلَامٌ عَلَيْكَ ۖ سَأَسْتَغْفِرُ لَكَ رَبِّي ۖ إِنَّهُ كَانَ بِي حَفِيًّا (47)
ইবরাহীম বললেন, ‘আপনার প্রতি সালাম [১]। আমি আপনার রবের কাছে আপনার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করব [২], নিশ্চয় তিনি আমার প্রতি খুবই অনুগ্রহশীল। |
وَأَعْتَزِلُكُمْ وَمَا تَدْعُونَ مِن دُونِ اللَّهِ وَأَدْعُو رَبِّي عَسَىٰ أَلَّا أَكُونَ بِدُعَاءِ رَبِّي شَقِيًّا (48)
‘আর আমি তোমাদের থেকে ও তোমরা আল্লাহ্ ছাড়া যাদের ইবাদাত কর তাদের থেকে পৃথক হচ্ছি; আর আমি আমার রবকে ডাকছি; আশা করি আমি আমার রবকে ডেকে আমি দুর্ভাগা হব না। |
فَلَمَّا اعْتَزَلَهُمْ وَمَا يَعْبُدُونَ مِن دُونِ اللَّهِ وَهَبْنَا لَهُ إِسْحَاقَ وَيَعْقُوبَ ۖ وَكُلًّا جَعَلْنَا نَبِيًّا (49)
অতঃপর তিনি যখন তাদের থেকে ও তারা আল্লাহ্ ছাড়া যাদের ‘ইবাদাত করত সেসব থেকে পৃথক হয়ে গেলেন, তখন আমরা তাকে দান করলাম ইসহাক ও ইয়া’কুব এনং প্রত্যেককে নবী করলাম [১]। |
وَوَهَبْنَا لَهُم مِّن رَّحْمَتِنَا وَجَعَلْنَا لَهُمْ لِسَانَ صِدْقٍ عَلِيًّا (50)
এবং তাদেরকে আমরা দান করলাম আমাদের অনুগ্রহ, আর তাদের নাম-যশ সমুচ্চ করলাম। |
وَاذْكُرْ فِي الْكِتَابِ مُوسَىٰ ۚ إِنَّهُ كَانَ مُخْلَصًا وَكَانَ رَسُولًا نَّبِيًّا (51)
আর স্মরণ করুন এ কিতাবে মূসাকে, তিনি ছিলেন বিশেষ মনোনীত [১] এবং তিনি ছিলেন রাসুল, নবী। |
وَنَادَيْنَاهُ مِن جَانِبِ الطُّورِ الْأَيْمَنِ وَقَرَّبْنَاهُ نَجِيًّا (52)
আর তাকে আমরা ডেকেছিলাম তূর পর্বতের ডান দিক থেকে [১] এবং আমরা অন্তরঙ্গ আলাপে তাকে নৈকট্য দান করেছিলাম। |
وَوَهَبْنَا لَهُ مِن رَّحْمَتِنَا أَخَاهُ هَارُونَ نَبِيًّا (53)
আর আমরা নিজ অনুগ্রহে তাকে দিলাম তার ভাই হারুনকে নবীরূপে। |
وَاذْكُرْ فِي الْكِتَابِ إِسْمَاعِيلَ ۚ إِنَّهُ كَانَ صَادِقَ الْوَعْدِ وَكَانَ رَسُولًا نَّبِيًّا (54)
আর স্মরণ করুন এ কিতাবে ইসমাঈলকে, তিনি তো ছিলেন প্রতিশ্রুতি পালনে সত্যাশ্রয়ী [১] এবং তিনি ছিলেন রাসুল, নবী |
وَكَانَ يَأْمُرُ أَهْلَهُ بِالصَّلَاةِ وَالزَّكَاةِ وَكَانَ عِندَ رَبِّهِ مَرْضِيًّا (55)
তিনি তার পরিজনবর্গকে সালাত ও যাকাতের নির্দেশ দিতেন [১] এবং তিনি ছিলেন তার রবের সন্তোষভাজন। |
وَاذْكُرْ فِي الْكِتَابِ إِدْرِيسَ ۚ إِنَّهُ كَانَ صِدِّيقًا نَّبِيًّا (56)
আর স্মরণ করুন এ কিতাবে ইদরীসকে, তিনি ছিলেন সত্যনিষ্ঠ নবী |
وَرَفَعْنَاهُ مَكَانًا عَلِيًّا (57)
আর আমরা তাকে উন্নীত করেছিলাম উচ্চ মর্যাদায় [১]। |
أُولَٰئِكَ الَّذِينَ أَنْعَمَ اللَّهُ عَلَيْهِم مِّنَ النَّبِيِّينَ مِن ذُرِّيَّةِ آدَمَ وَمِمَّنْ حَمَلْنَا مَعَ نُوحٍ وَمِن ذُرِّيَّةِ إِبْرَاهِيمَ وَإِسْرَائِيلَ وَمِمَّنْ هَدَيْنَا وَاجْتَبَيْنَا ۚ إِذَا تُتْلَىٰ عَلَيْهِمْ آيَاتُ الرَّحْمَٰنِ خَرُّوا سُجَّدًا وَبُكِيًّا ۩ (58)
এরাই তারা, নবীদের মধ্যে আল্লাহ্ যাদেরকে অনুগ্রহ করেছেন, আদমের বংশ থেকে এবং যাদেরকে আমরা নূহের সাথে নৌকায় আরোহণ করিয়েছিলাম। আর ইবরাহীম ও ইসরাঈলের বংশোদ্ভূত, আর যাদেরকে আমরা হেদায়াত দিয়েছিলাম এবং মনোনীত করেছিলাম; তাদের কাছে দয়াময়ের আয়াত তিলাওয়াত করা হলে তারা লুটিয়ে পড়ত সাজদায় [১] এবং কান্নায় [২]। |
۞ فَخَلَفَ مِن بَعْدِهِمْ خَلْفٌ أَضَاعُوا الصَّلَاةَ وَاتَّبَعُوا الشَّهَوَاتِ ۖ فَسَوْفَ يَلْقَوْنَ غَيًّا (59)
তাদের পরে আসলো অযোগ্য উত্তরসূরিরা [১], তারা সালাত নষ্ট করল [২] এবং কু-প্রবৃত্তির [৩] অনুবর্তী হল। কাজেই অচিরেই তার ক্ষতিগ্রস্ততার [৪] সম্মুখীন হবে। |
إِلَّا مَن تَابَ وَآمَنَ وَعَمِلَ صَالِحًا فَأُولَٰئِكَ يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ وَلَا يُظْلَمُونَ شَيْئًا (60)
কিন্তু তারা নয়--- যারা তওবা করেছে, ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করেছে। তারা তো জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর তাদের প্রতি কোনো যুলুম হবে না। |
جَنَّاتِ عَدْنٍ الَّتِي وَعَدَ الرَّحْمَٰنُ عِبَادَهُ بِالْغَيْبِ ۚ إِنَّهُ كَانَ وَعْدُهُ مَأْتِيًّا (61)
এত স্থায়ী জান্নাত, যে গায়েবী প্রতিশ্রতি দয়াময় তাঁর বান্দাদেরকে দিয়েছেন [১]। নিশ্চয় তাঁর প্রতিশ্রুত বিষয় আসবেই। |
لَّا يَسْمَعُونَ فِيهَا لَغْوًا إِلَّا سَلَامًا ۖ وَلَهُمْ رِزْقُهُمْ فِيهَا بُكْرَةً وَعَشِيًّا (62)
সেখানে তারা ‘সালাম’ তথা শান্তি ছাড়া অন্য কোনো অসার বাক্য শুনবে না [১] এবং সেখানে সকাল সন্ধ্যা তাদের জন্য থাকবে তাদের রিযিক [২]। |
تِلْكَ الْجَنَّةُ الَّتِي نُورِثُ مِنْ عِبَادِنَا مَن كَانَ تَقِيًّا (63)
এ সে জান্নাত, যার অধিকারী করব আমরা আমাদের বান্দাদের মধ্যে মুত্তাকীদেরকে [১]। |
وَمَا نَتَنَزَّلُ إِلَّا بِأَمْرِ رَبِّكَ ۖ لَهُ مَا بَيْنَ أَيْدِينَا وَمَا خَلْفَنَا وَمَا بَيْنَ ذَٰلِكَ ۚ وَمَا كَانَ رَبُّكَ نَسِيًّا (64)
‘আর আমরা আপনার রবের আদেশ ছাড়া অবতরণ করি না [১]; যা আমাদের সামনে ও পিছনে আছে ও যা এ দু’য়ের অন্তর্বর্তী তা তাঁরই। আর আপনার রব বিস্মৃত হন না [২]।’ |
رَّبُّ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا فَاعْبُدْهُ وَاصْطَبِرْ لِعِبَادَتِهِ ۚ هَلْ تَعْلَمُ لَهُ سَمِيًّا (65)
তিনি আসমানসমূহ, যমীন ও তাদের অন্তর্বর্তী যা কিছু আছে, সে সবের রব। কাজেই তাঁরই ইবাদাত করুন এবং তাঁর ইবাদাতে ধৈর্যশীল থাকুন [১]। আপনি কি তাঁর সমনামগুণসম্পন্ন কাউকেও জানেন [২] |
وَيَقُولُ الْإِنسَانُ أَإِذَا مَا مِتُّ لَسَوْفَ أُخْرَجُ حَيًّا (66)
আর মানুষ বলে, ‘আমার মৃত্যু হলে আমি কি জীবিত অবস্থায় উত্থিত হব?’ |
أَوَلَا يَذْكُرُ الْإِنسَانُ أَنَّا خَلَقْنَاهُ مِن قَبْلُ وَلَمْ يَكُ شَيْئًا (67)
মানুষ কি স্মরণ করে না যে, আমরা তাকে আগে সৃষ্টি করেছি যখন সে কিছুই ছিল না [১] |
فَوَرَبِّكَ لَنَحْشُرَنَّهُمْ وَالشَّيَاطِينَ ثُمَّ لَنُحْضِرَنَّهُمْ حَوْلَ جَهَنَّمَ جِثِيًّا (68)
কাজেই শপথ আপনার রবের! আমরা তো তাদেরকে ও শয়তানদেরকে একত্রে সমবেত করবই [১] তারপর আমরা নতজানু অবস্থায় জাহান্নামের চারদিকে তাদেরকে উপস্থিত করবই [২]। |
ثُمَّ لَنَنزِعَنَّ مِن كُلِّ شِيعَةٍ أَيُّهُمْ أَشَدُّ عَلَى الرَّحْمَٰنِ عِتِيًّا (69)
তারপর প্রত্যেক দলের মধ্যে যে দয়াময়ের সর্বাধিক অবাধ্য আমরা তাকে টেনে বের করবই [১]। |
ثُمَّ لَنَحْنُ أَعْلَمُ بِالَّذِينَ هُمْ أَوْلَىٰ بِهَا صِلِيًّا (70)
তারপর আমরা তো তাদের মধ্যে জাহান্নামে দগ্ধ হওয়ার যারা সবচেয়ে বেশি যোগ্য তাদের বিষয় ভাল জানি। |
وَإِن مِّنكُمْ إِلَّا وَارِدُهَا ۚ كَانَ عَلَىٰ رَبِّكَ حَتْمًا مَّقْضِيًّا (71)
আর তোমাদের প্রত্যেকেই তার (জাহান্নামের) উপর দিয়েই অতিক্রম করবে [১], এটা আপনার রবের অনিবার্য সিদ্ধান্ত। |
ثُمَّ نُنَجِّي الَّذِينَ اتَّقَوا وَّنَذَرُ الظَّالِمِينَ فِيهَا جِثِيًّا (72)
পরে আমরা উদ্ধার করব তাদেরকে, যারা তাকওয়া অবলম্বন করেছে এবং যালেমদেরকে সেখানে নতজানু অবস্থায় রেখে দেব। |
وَإِذَا تُتْلَىٰ عَلَيْهِمْ آيَاتُنَا بَيِّنَاتٍ قَالَ الَّذِينَ كَفَرُوا لِلَّذِينَ آمَنُوا أَيُّ الْفَرِيقَيْنِ خَيْرٌ مَّقَامًا وَأَحْسَنُ نَدِيًّا (73)
আর তাদের কাছে আমাদের স্পষ্ট আয়াতসমূহ তেলওয়াত করা হলে কাফেররা মুমিনদেরকে বলে, দু’দলের মধ্যে কারা মর্যাদায় শ্রেষ্ঠতর ও মজলিস হিসেবে উত্তম [১] |
وَكَمْ أَهْلَكْنَا قَبْلَهُم مِّن قَرْنٍ هُمْ أَحْسَنُ أَثَاثًا وَرِئْيًا (74)
আর তাদের আগে আমরা বহু মানবগোষ্ঠীকে বিনাশ করেছি---যারা তাদের চেয়ে সম্পদ ও বাহ্যদৃষ্টিতে শ্রেষ্ঠ ছিল। |
قُلْ مَن كَانَ فِي الضَّلَالَةِ فَلْيَمْدُدْ لَهُ الرَّحْمَٰنُ مَدًّا ۚ حَتَّىٰ إِذَا رَأَوْا مَا يُوعَدُونَ إِمَّا الْعَذَابَ وَإِمَّا السَّاعَةَ فَسَيَعْلَمُونَ مَنْ هُوَ شَرٌّ مَّكَانًا وَأَضْعَفُ جُندًا (75)
বলুন, ‘যারা বিভ্রান্তিতে আছে, দয়াময় তাদেরকে প্রচুর অবকাশ দেবেন যতক্ষণ না তারা যে বিষয়ে তাদেরকে সতর্ক করা হচ্ছে তা দেখবে; তা শাস্তি হোক বা কেয়ামতই হোক [১]। অতঃপর তারা জানতে পারবে কে মর্যাদায় নিকৃষ্ট ও কে দলবলে দুর্বল। |
وَيَزِيدُ اللَّهُ الَّذِينَ اهْتَدَوْا هُدًى ۗ وَالْبَاقِيَاتُ الصَّالِحَاتُ خَيْرٌ عِندَ رَبِّكَ ثَوَابًا وَخَيْرٌ مَّرَدًّا (76)
আর যারা সৎপথে চলে আল্লাহ্ তাদের হেদায়াত বৃদ্ধি করে দেন [১]; এবং স্থায়ী সৎকাজ সমুহ [২] আপনার রবের পুরস্কার প্রাপ্তির জন্য শ্রেষ্ঠ এবং পরিণতির দিক দিয়েও অতি উত্তম। |
أَفَرَأَيْتَ الَّذِي كَفَرَ بِآيَاتِنَا وَقَالَ لَأُوتَيَنَّ مَالًا وَوَلَدًا (77)
আপনি কি জেনেছেন (এবং আশ্চর্য হয়েছেন) সে ব্যক্তি সম্পর্কে, যে আমাদের আয়াতসমূহে কুফরি করে এবং বলে, ‘আমাকে অবশ্যই ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দেয়া হবে [১]। |
أَطَّلَعَ الْغَيْبَ أَمِ اتَّخَذَ عِندَ الرَّحْمَٰنِ عَهْدًا (78)
সে কি গায়েব দেখে নিয়েছে, নাকি দয়াময়ের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি লাভ করেছে |
كَلَّا ۚ سَنَكْتُبُ مَا يَقُولُ وَنَمُدُّ لَهُ مِنَ الْعَذَابِ مَدًّا (79)
কখনই নয়, সে যা বলে আমরা তা লিখে রাখব এবং তাঁর শাস্তি বৃদ্ধই করতে থাকব [১]। |
وَنَرِثُهُ مَا يَقُولُ وَيَأْتِينَا فَرْدًا (80)
আর সে যা বলে তা থাকবে আমাদের অধিকারে [১] এবং সে আমাদের কাছে আসবে একা। |
وَاتَّخَذُوا مِن دُونِ اللَّهِ آلِهَةً لِّيَكُونُوا لَهُمْ عِزًّا (81)
আর তারা আল্লাহ্ ছাড়া অন্য বহু ইলাহ গ্রহণ করেছে, যাতে ওরা তাদের সহায় হয় [১] |
كَلَّا ۚ سَيَكْفُرُونَ بِعِبَادَتِهِمْ وَيَكُونُونَ عَلَيْهِمْ ضِدًّا (82)
কখনই নয়, ওরা তো তাদের ইবাদাত অস্বীকার করবে এবং তাদের বিরোধী হয়ে যাবে [১]। |
أَلَمْ تَرَ أَنَّا أَرْسَلْنَا الشَّيَاطِينَ عَلَى الْكَافِرِينَ تَؤُزُّهُمْ أَزًّا (83)
আপনি কি লক্ষ্য করেননি যে, আমরা কাফেরদের জন্য শয়তানদেরকে ছেড়ে রেখেছি, তাদেরকে মন্দ কাজে বিশেষভাবে প্রলুব্ধ করার জন্য [১] |
فَلَا تَعْجَلْ عَلَيْهِمْ ۖ إِنَّمَا نَعُدُّ لَهُمْ عَدًّا (84)
কাজেই তাদের বিষয়ে আপনি তাড়াতাড়ি করবেন না। আমরা তো গুনছি তাদের নির্ধারিত কাল [১] |
يَوْمَ نَحْشُرُ الْمُتَّقِينَ إِلَى الرَّحْمَٰنِ وَفْدًا (85)
যেদিন দয়াময়ের নিকট মুত্তাকীগণকে সম্মানিত মেহমানরূপে [১] আমরা সমবেত করব |
وَنَسُوقُ الْمُجْرِمِينَ إِلَىٰ جَهَنَّمَ وِرْدًا (86)
এবং অপরাধিদেরকে তৃষ্ণাতুর অবস্থায় জাহান্নামের দিকে হাঁকিয়ে নিয়ে যাবো। |
لَّا يَمْلِكُونَ الشَّفَاعَةَ إِلَّا مَنِ اتَّخَذَ عِندَ الرَّحْمَٰنِ عَهْدًا (87)
যারা দয়াময়ের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি নিয়েছে, তারা ছাড়া কেউ সুপারিশ করার মালিক হবে না [১]। |
وَقَالُوا اتَّخَذَ الرَّحْمَٰنُ وَلَدًا (88)
আর তারা বলে, ‘দয়াময় সন্তান গ্রহণ করেছেন’। |
لَّقَدْ جِئْتُمْ شَيْئًا إِدًّا (89)
তোমরা তো এমন এক বীভৎস বিষয়ের অবতারণা করছ |
تَكَادُ السَّمَاوَاتُ يَتَفَطَّرْنَ مِنْهُ وَتَنشَقُّ الْأَرْضُ وَتَخِرُّ الْجِبَالُ هَدًّا (90)
যাতে আসমানসমূহ বিদীর্ণ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়, আর যমীন খণ্ড-বিখণ্ড এবং পর্বতমণ্ডলী চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে আপতিত হবে |
أَن دَعَوْا لِلرَّحْمَٰنِ وَلَدًا (91)
এ জন্য যে, তারা দয়াময়ের প্রতি সন্তান আরপ করে [১]। |
وَمَا يَنبَغِي لِلرَّحْمَٰنِ أَن يَتَّخِذَ وَلَدًا (92)
অথচ সন্তান গ্রহণ করা দয়াময়ের জন্য শোভন নয় |
إِن كُلُّ مَن فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ إِلَّا آتِي الرَّحْمَٰنِ عَبْدًا (93)
আসমানসমূহ ও যমীনে এমন কেউ নেই, যে দয়াময়ের কাছে বান্দারূপে উপস্থিত হবে না। |
لَّقَدْ أَحْصَاهُمْ وَعَدَّهُمْ عَدًّا (94)
তিনি তাদের সংখ্যা জানেন এবং তিনি তাদেরকে বিশেষভাবে গুণে রেখেছেন [১]। |
وَكُلُّهُمْ آتِيهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَرْدًا (95)
আর কিয়ামতের দিন তাদের সবাই তাঁর কাছে আসবে একাকি অবস্থায়। |
إِنَّ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ سَيَجْعَلُ لَهُمُ الرَّحْمَٰنُ وُدًّا (96)
নিশ্চয় যারা ঈমান আনে ও সৎকাজ করে দয়াময় অবশ্যই তাদের জন্য সৃষ্টি করেন ভালবাসা [১]। |
فَإِنَّمَا يَسَّرْنَاهُ بِلِسَانِكَ لِتُبَشِّرَ بِهِ الْمُتَّقِينَ وَتُنذِرَ بِهِ قَوْمًا لُّدًّا (97)
আর আমরা তো আপনার জবানিতে কুরআনকে সহজ করে দিয়েছি যাতে আপনি তা দ্বারা মুত্তাকীদেরকে সুসংবাদ দিতে পারেন এবং বিতণ্ডাপ্রিয় সম্প্রদায়কে তা দ্বারা সতর্ক করতে পারেন। |
وَكَمْ أَهْلَكْنَا قَبْلَهُم مِّن قَرْنٍ هَلْ تُحِسُّ مِنْهُم مِّنْ أَحَدٍ أَوْ تَسْمَعُ لَهُمْ رِكْزًا (98)
আর তাদের আগে আমরা বহু প্রজন্মকে বিনাশ করেছি! আপনি কি তাদের কারো অস্তিত্ব অনুভব করেন অথবা ক্ষীণতম শব্দও শুনতে পান [১] |
